বাংলাদেশ ভূ-তাত্তি¡ক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) কর্তৃক ১৯৭৪ সালে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া এলাকায় ভূ-গর্ভের ১২৮-১৩৬ মিঃ গভীরতায় গ্রানাইট পাথর আবিস্কৃত হয়। পরবর্তীতে মেসার্স এস এনসি, লিমিটেড কানাডা কর্তৃক ১৯৭৭ সালে ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন এবং মেসার্স নিপ্পন কোই, জাপান কর্তৃক আার্থিক ও মার্কেট সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। সমীক্ষা সমূহে মধ্যপাড়ায় একটি ভূ-গর্ভস্থ খনি বাস্তবায়ন কারিগরি ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক বলে প্রতিয়মান হওয়ায় ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ এবং উত্তর কোরীয় সরকারের মধ্যে অর্থনৈতিক, কারিগরি, বৈজ্ঞানিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ে একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। উক্ত সমঝোতা স্মারকের ধারাবাহিকতায় মধ্যপাড়া গ্রানাইট পাথর খনি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) এবং উত্তর কোরীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কোরীয়া সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন কর্পোরেশন (নামনাম) এর মধ্যে ২৭ মার্চ ১৯৯৪ তারিখে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট এর আওতায় একটি টার্ণকি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স নামনাম সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ সাল হতে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পের কাজ শুরু করে। প্রতিদিন তিন শিফটে ৫,৫০০ মেট্রিক টন গ্রানাইট পাথর উত্তোলনের জন্য মধ্যপাড়া খনি ডিজাইন করা হয়। প্রকল্পটি মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড (এমজিএমসিএল) হিসাবে ০৪ আগস্ট ১৯৯৮ তারিখ নিবন্ধিত হয়। এমজিএমসিএল-এর অনুমোদিত মূলধন ৩৫০,০০,০০,০০০.০০ টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১,৭৫,০০,৭০০.০০ টাকা। জুলাই ২০০১ সালের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্তির সময় নির্ধারিত থাকলেও নামনাম ২৫ মে ২০০৭ সালে খনিটি এমজিএমসিএল-এর নিকট হস্তান্তর করে। এমজিএমসিএল ২৫ মে ২০০৭ হতে নভেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত এক শিফটে সীমিত পরিসরে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় খনি পরিচালনা করে।
পরবর্তীতে দেশের ক্রমবর্ধনশীল ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে গ্রানাইট পাথর ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে খনির উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে “Management of Operation and Development, Production, Maintenance and Provisioning Services of Maddhapara Hard Rock Mine” শীর্ষক চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড এবং জার্মানীয়া-ট্রেষ্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর মধ্যে ২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে ৬ বছর মেয়াদী বৈদেশিক ও স্থানীয় মুদ্রায় ১৭১.৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১,৪০০ কোটি টাকা প্রায়) মূল্যমানের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৬ বছরে ১২টি নতুন স্টোপ উন্নয়ন ও ৯২ লক্ষ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করাসহ খনিতে স্থাপিত গুরুত্বপূর্ণ যান্ত্রিক স্থাপনাসমূহের মডিফিকেশন করে খনিটিকে একটি অত্যাধুনিক স্থাপনা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। পরবর্তীতে ২০.০২.২০২০ তারিখে একটি সাইড লেটার এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয় যা ২৯-০৭-২০২০ তারিখ হতে কার্যকর হয়েছে।